64 বার পঠিত
১০ অক্টোবর সকাল ১১ টায় উজিরপুর উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক উজিরপুর উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি ফারিহা তানজিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ শিকদার বাচ্চু , প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন উজিরপুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন বেপারী, উপস্থিত ছিলেন উজিরপুর কৃষি কর্মকর্তা কপিল বিশ্বাস, উজিরপুর মডেল থানার ওসি ( তদন্ত ) তৌহিদুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক সাংবাদিক বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সহ এলাকার গন্যমান্য সাধারণ জনগণ।
উজিরপুর উপজেলা মৎস কর্মকর্তা সাইফুজ্জামানের সঞ্চালনায় সভায় ১২ অক্টোবর থেকে ২রা নভেম্বর পযর্ন্ত মা ইলিশ রক্ষায় উপজেলার নদী তীরবর্তী প্রকৃত ১৬০০ জন কার্ডধারী জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি চাল প্রদান নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে নিদৃষ্ঠ স্থানে নৌকা রাখা, বরফ কল বন্ধ রাখা, বাজার তদারকি, উজিরপুর অংশের নদীকে তিন ভাগে ভাগ করে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ২৪ ঘন্টা টহল দেয়া সহ ইলিশ সম্পদ রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা করেন।
উল্লেখ্য বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) সূত্রে জানা গেছে, একটি ইলিশ ৩ থেকে ২১ লাখ পর্যন্ত ডিম দেয়। মিঠা পানিতে ডিম দেওয়ার পর ২২-২৬ ঘণ্টার মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা হয় এবং ৫-১৫ সেন্টিমিটার আকার পর্যন্ত ৫-৭ মাস এরা নদীতে থাকে। পরবর্তী সময়ে এরা আবার সাগরের দিকে ধাবিত হয়। ইলিশ ১-২ বছর বয়সে (২২-২৫) সেন্টিমিটার আকারে পুরুষ; ২৮-৩০ সেন্টিমিটার আকারের স্ত্রী প্রজননক্ষম হয়। তখন এরা আবার মিঠা পানির দিকে অভিপ্রয়াণ করে। তখনই সাগর মোহনায় স্ত্রী ইলিশ অপেক্ষাকৃত বেশি ধরা পড়ে। ইলিশ সারা বছরই কম-বেশি ডিম দেয়। তবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরই হচ্ছে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। অক্টোবর অর্থাৎ আশ্বিন মাসের প্রথম পূর্ণিমার ভরা চাঁদে এ মাছ প্রধানত ডিম ছাড়ে। এ জন্য চলতি বছরে আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার দিনসহ পূর্বের ১৭ দিন এবং পরের ৪ দিন (১৭+১+৪) মোট ২২ দিন ইলিশ আহরণ, বিতরণ, বিপণন, পরিবহন, মজুত ও বিনিময় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়।
বিএফআরআই সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে মোট ৩ প্রজাতির ইলিশ পাওয়া যায়। এর মধ্যে দুটি (চন্দনা ও গোর্তা ইলিশ) সারা জীবন উপকূল ও সাগরে কাটায় এবং অপরটি মিঠা পানি ও লোনা পানিতে জীবন অতিবাহিত করে। ইলিশ স্রোতের বিপরীতে দৈনিক ৭১ কিলোমিটার অভিপ্রয়াণ করতে পারে। পৃথিবীর মোট ১১টি দেশে বর্তমানে ইলিশ পাওয়া যায়। দেশগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান, ইরান, ইরাক, কুয়েত, বাহরাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড। বিশ্বে আহরিত ইলিশের প্রায় ৭৫ ভাগ বাংলাদেশ আহরণ করে। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে, মিয়ানমার এবং তৃতীয় অবস্থানে ভারত। ১০ বছর আগে দেশের ২১টি উপজেলার নদ-নদীতে ইলিশ পাওয়া যেত। বর্তমানে ১২৫টি উপজেলার নদ-নদীতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ।