200 বার পঠিত
ইদ মানে খুশি, ইদ মানে আনন্দ। বছরে ইদ আসে দুই বার। আর ইদ কেন্দ্র করে প্রতি মানুষের জীবনে থাকে বাড়তি উৎসাহ, উত্তেজনা। ইদে যাওয়ার জন্য পোশাক কেনাকাটা করে সবাই। সকল শ্রেণি পেশার মানুষ তাদের সামর্থ অনুযায়ী নিজ ও প্রিয়জনের জন্য পোশাক কিনে।
কিন্তু এই ইদে প্রতি মানুষের মাঝে বিরাজ করছে বিরাট উৎসবমুখর আনন্দ। কারণ দীর্ঘ ২ বছর করোনা মহামারিতে বিশ্বের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকে। জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে। ফলে দুই বছর মানুষ তাদের পছন্দ মতো ইদের পোশাক কেনাকাটা করতে পারে নি। এই বছর করোনা সংক্রমণের হার কমেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বস্ত্র ব্যবসায়ী এখন খুবই ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রতিদিন কম বেশি ভালোই বিক্রি করছে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের অন্যতম জেলা সাতক্ষীরা। এখানে বিভিন্ন শপিং মল, কাপড়ের দোকান, শো রুমে কেনাবেচার ধুম লেগেছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে শুরু করে রাত ১১টা পর্যন্ত কেনাকাটা চলে। সাতক্ষীরা সদরের নিউ মার্কেট, আমিনিয়া মার্কেট সহ অনেক জায়গায় পাইকারী ব্যবসায়ীর ভিড় জমেছে। এসব পাইকারী ব্যবসায়ী পোশাক কিনে প্রান্তিক অঞ্চলে স্বল্প লাভে বিক্রি করছে। এতে সব শ্রেণির মানুষের মাঝে ইদের আনন্দ ছড়িয়ে যাচ্ছে। এছাড়া সাতক্ষীরা সদরের ফুটপাতে হকাররা বাচ্চাদের অনেক পোশাক যেমন জামা, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, গেঞ্জি, জুতা, ফতুয়া, পাজামা ইত্যাদি বিক্রি করছে।
প্রান্তিক অঞ্চলের মধ্যে সাহিত্যিক মোঃ ওয়াজেদ আলীর গ্রাম সাতক্ষীরা সদরের বাঁশদহা ইদের শপিং করার জন্য খুবই পরিচিত। এখানে শিশু থেকে বৃদ্ধ মানুষের সকল পোশাক পাওয়া যায়। আর জনসাধারণের সামর্থ্যের মধ্যে কেনাকাটা করতে পারে।
এখানে মেয়েদের শাড়ি, থ্রি পিছ, বোরকা, সালোয়ার কামিজ, গাউন, পাজামা, লেহেঙ্গা, প্লাজু আর ছেলেদের লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট, জুতো, বেল, মোজা ইত্যাদি সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়। ক্রেতাদের নিকট পছন্দের অন্য একটি জায়গা হলো ভোমরা স্থল বন্দরের জাহাঙ্গীর মার্কেট। এখানে দেশি বিদেশি অনেক পোশাক পাওয়া যায়।
তবে এই বছর ক্রেতারা প্রসাধনী সামগ্রী তুলনামূলক কম কেনাকাটা করছে৷ পোশাকের দোকানে উপচে পড়া ভিড়। মানুষের উপস্তিতি প্রমাণ করে দীর্ঘ ২ বছর পর ইদের শপিং করার আনন্দ। এছাড়া সীমান্তবর্তী অঞ্চল বৈকারী, কাথন্ডা, কুশখালীতে ক্রেতার যথেষ্ট উপস্থিতি দেখা যায়।
এবার ইদে শপিং মার্কেটে ক্রেতার ভিড় থাকলেও পশ্চিমা বাংলা, হিন্দি সিরিয়ালের নামানুসারে কিছু ড্রেস বিক্রি হচ্ছে। যা খুবই অশালীন এবং বাঙালি সংস্কৃতির পরিপন্থী। তার মধ্যে বাদাম, পাখি, কিরণমালা, ঢং ঢং, পুষ্পা, পাগলু এবং এমনকি কীটপতঙ্গ নাম ছারপোকাও আছে।
বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাবে এসব পোশাক জনপ্রিয়তা পেলেও দেশি গ্রামীণ সংস্কৃতির শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, জামা বিলুপ্তির পথে যাচ্ছে। তাই আমাদের সকলের উচিত দেশীয় পোশাক কিনে ইদের আনন্দ পরিবারের মাঝে ভাগাভাগি করে নেওয়া।
মোঃ আবদুল্লাহ আলমামুন
শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়